শেয়ার বাজার কী?
বর্তমান সময়ে টেলিভিশন কিংবা পত্রিকায় শেয়ার বাজার শব্দটি নিয়মিত দেখা যায়। তাছাড়া বিভিন্ন মহলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে শেয়ার বাজার। শেয়ার (Share) শব্দটির বাংলা অর্থ অংশ বিনিময় কিংবা ভাগাভাগি করা। শেয়ার বাজারও তেমনই একটি বিষয়। সাধারণ অর্থে যেখানে শেয়ার কেনাবেচা হয় তাকে শেয়ার বাজার বলে। এখান থেকে বিও অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ শেয়ার কেনাবেচা করতে পারেন। যদিও শেয়ারকে আমরা একটি পণ্য হিসেবে মনে করি, প্রকৃতপক্ষে এটি দৃশ্যমান কোনো বস্তু নয়। শুধু টাকার বিনিময়ে মালিকানা পরিবর্তনের দৃশ্যই চোখে পড়ে। শেয়ার কেনাবেচার জন্য বাংলাদেশে দুটি বাজার আছে। একটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। আবার এই দুটি বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে একটি সংস্থা, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা এসইসি। এসইসির কাজ হলো শেয়ার বাজার পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ; প্রয়োজনে আইন প্রণয়ন, সংশোধন, পরিমার্জন; বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাসহ অনিয়ম প্রতিরোধ ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(বিও) অ্যাকাউন্ট
স্টক এক্সচেঞ্জগুলোর অনুমোদিত বহু এজেন্ট রয়েছে, এগুলো ব্রোকারেজ হাউস নামে পরিচিত। এসব হাউসে আপনি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স অ্যাকাউন্ট বা বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন। যাদের বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এবং যাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে তারাই বিও অ্যাকাউন্ট করতে পারবেন। বিও অ্যাকাউন্ট অনেকটা ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মতই।
অ্যাকাউন্টকারীর দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, নমিনির এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি অথবা পাসপোর্টের ফটোকপির সঙ্গে ব্রোকারেজ হাউসের নির্ধারিত ফি জমা দিলেই আপনি দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আপনার বিও অ্যাকাউন্ট নম্বর এবং গ্রাহক পরিচিতি নম্বর পেয়ে যাবেন। গ্রাহক পরিচিতি নম্বর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেয়ার লেনদেন বা কেনাবেচা করতে পারবেন। তবে আপনি যে ব্রোকারেজ হাউসের মাধ্যমে বিও খুলেছেন সেই হাউসের মাধ্যমেই লেনদেন করতে হবে।
বন্ড কী?
বন্ড বা ডিভেঞ্চার হল শেয়ার এর মতই একটি মালিকানার অংশ। শেয়ার এর সাথে বন্ড বা ডিভেঞ্চার এর পার্থক্য হল, বন্ড বা ডিভেঞ্চার কেনার পরে তা ইচ্ছা করলেই যেকোন দিন বিক্রি করা যায় না এর ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ বা ম্যাচুয়েটি সময় থাকে তা পূর্ণ হওয়ার পরই আপনি তা বিক্রি করতে পারবেন। অতএব, আপনি যদি ৫০০০০ টাকার বন্ড বা ডিভেঞ্চার ক্রয় করেন এবং এই বন্ড বা ডিভেঞ্চার মেয়াদ যদি ৫ বছর হয় তাহলে আপনি ৫ বছর পরেই তা বিক্রি করে টাকা উত্তোলন করতে পারবেন এর আগে চাইলেও আপনি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন না। অন্যদিকে বন্ড বা ডিভেঞ্চারের একটি বড় সুবিধা হল মেয়াদ শেষে আপনি অবশ্যই কিছু না কিছুলাভ পাবেন যা শেয়ার ক্ষেত্রে নাও হতে পারে কিন্তু দুখঃজনক হলেও সত্য বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে বন্ড বা ডিভেঞ্চার ক্রয় বিক্রয় হয় না বললেই চলে।
মিউচুয়াল ফান্ড কী?
মিউচুয়াল ফান্ড হল এমন একটি ফান্ড যেখানে অনেক ব্যক্তির টাকা এক সাথে জমা থাকে এবং জমাকৃত অর্থ একজন শেয়ার বাজার সম্পর্কে অভিজ্ঞ দক্ষ ব্যক্তিকে দেওয়া হয় যিনি বুঝে শুনে সেই টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে লাভ করে তা সবার মধ্যে বন্টন করে দেন। যেমনঃ আমরা ব্যাংকে টাকা রাখার ফলে একটি নির্দিষ্ট সময় পরে ব্যাংক আমাদের সুদ দিয়ে থাকে ঠিক একই ভাবে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের মাধ্যমে আমরা ব্যাংক এর চেয়ে ৩ গুন বেশিও লাভ পেতে পারি অনেক ক্ষেত্রে।
No comments:
Post a Comment